ঢাকা, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪
সর্বশেষ:

জুমার নামাজের গুরুত্ব  

ধর্ম ডেস্ক

প্রকাশিত: ০২:৪০, ২৩ আগস্ট ২০১৯  

ফাইল ফটো

ফাইল ফটো

মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনুল কারিমে জুমা সম্পর্কে ইরশাদ করেন,
 
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِذَا نُودِي لِلصَّلَاةِ مِن يَوْمِ الْجُمُعَةِ فَاسْعَوْا إِلَى ذِكْرِ اللَّهِ وَذَرُوا الْبَيْعَ ذَلِكُمْ خَيْرٌ لَّكُمْ إِن كُنتُمْ تَعْلَمُونَ

‘হে মুমিনগণ! জুমার দিন যখন নামাজের আহ্বান জানানো হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণে (মসজিদে) এগিয়ে যাও এবং বেচা-কেনা (দুনিয়াবি যাবতীয় কাজকর্ম) ছেড়ে দাও। এটা তোমাদের জন্য কল্যাণকর; যদি তোমরা জানতে।’ (সূরা জুমা: ০৯)।

রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, জুমা হচ্ছে শ্রেষ্ঠ দিবস। যে ব্যক্তি সুন্দর রূপে ওজু করা পূর্বক জুমা নামাজ পড়তে আসবে তার পূর্ববর্তী জুমা থেকে বর্তমান জুমা পর্যন্ত সংগঠিত গুনাহ সমূহ মাফ হয়ে যায়।

আরো পড়ুন>>> গুনাহমুক্ত জীবন লাভের আমল

রাসূলুল্লাহ (সা.) আরো বলেন, যে ব্যক্তি অবহেলা-অলসতা করে পর পর তিন জুমা নামাজ ছেড়ে দিল, আল্লাহ তার অন্তরে মোহর মেরে দেবেন। (আবু দাউদ)।

হজরত হাফসা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘প্রত্যেক (প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ) মুসলমানের জন্য জুমার নামাজ আদায় করা ওয়াজিব- অপরিহার্য কর্তব্য। (সুনানে নাসায়ী)।

হজরত তারিক ইবনে শিহাব (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, নবী করিম সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘ক্রীতদাস, মহিলা, নাবালক শিশু ও অসুস্থ ব্যক্তি, এ চার প্রকার মানুষ ছাড়া সব মুসলমানদের ওপর জুমার নামাজ আদায় করা অপরিহার্য কর্তব্য।’ (আবু দাউদ শরিফ)।

বন্ধুগণ, কেউ যদি ইচ্ছাকৃতভাবে জুমার নামাজ ছেড়ে দেয়, তাহলে তার ব্যাপারে রয়েছে কঠোর হুঁশিয়ারি। হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী করিম সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো শরিয়তসম্মত কারণ ছাড়া জুমার নামাজ বর্জন করবে, তার নাম মুনাফিক হিসেবে এমন দফতরে লিপিবদ্ধ হবে, যা মুছে ফেলা হবে না এবং পরিবর্তনও করা যাবে না।’ (তাফসীরে মাজহারী)।

হজরত সালমান (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিনে সুন্দর করে গোসল করবে, অতপর তেল ব্যবহার করবে এবং সুগন্ধি লাগাবে, তারপর মসজিদে গমন করবে, দুই মুসল্লির মাঝে জোর করে জায়গা নেবে না, সে নামাজ আদায় করবে এবং ইমাম যখন খুতবা দেবেন, চুপ করে মনোযোগ সহকারে তার খুতবা শুনবে, দুই জুমার মধ্যবর্তী সময়ে তার সব গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হবে।’ (আবু দাউদ শরীফ)।

অন্য এক হাদিসে পাওয়া যায়, নবী করিম সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘নিঃসন্দেহে জুমার দিন সেরা দিন ও আল্লাহর কাছে সর্বোত্তম দিন। আল্লাহর কাছে তা ঈদুল আজহা ও ঈদুল ফিতরের দিনের চেয়েও উত্তম।’ (ইবনে মাজাহ শরীফ)।

নবী করিম সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেন, ‘যেসব দিনে সূর্য উদিত হয়েছে তার মধ্যে সর্বোত্তম হলো জুমার দিন। সেদিনেই আদম (আ.)-কে সৃষ্টি করা হয়েছে এবং সেই দিনেই তাকে জান্নাতে পাঠানো হয়েছে এবং সেই দিনেই জান্নাত থেকে তাকে বের করা হয়েছে। যেদিন কিয়ামত হবে, সেদিনও হবে জুমার দিন।’ (মুসলিম শরীফ)।

বরকতময় একটি হাদিস উল্লেখ করা হলো, হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, নবী করিম সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘জুমার দিনে এমন একটা সময় আছে, যে সময়ে কোনো মুমিন বান্দা আল্লাহর কাছে ভালো কোনো কিছু প্রার্থনা করলে, অবশ্যই আল্লাহ তাকে তা দান করবেন।’ (মুসলিম শরীফ ও মুসনাদে আহমদ)।

তিরমিযী শরীফে আছে, হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) এর কাছে এমন এক ব্যক্তির ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হলো, যে দিনভর রোজা রাখে এবং রাতভর নামাজ পড়ে কিন্তু জামাতে কিংবা জুমায় হাজির হয় না- তার হুকুম কী? প্রত্যুত্তরে তিনি বললেন- এমতাবস্থায় তার মৃত্যু হলে সে জাহান্নামে যাবে।

হজরত আলী (রা.) বলেন, মসজিদের প্রতিবেশীর নামাজ মসজিদ ছাড়া আদায় হয় না। বলা হলো মসজিদের প্রতিবেশী কে? তিনি বললেন, যে আজান শুনতে পায়।

হাদিস অনুযায়ী জুমার নামাজ পড়া যেমন ওয়াজিব তেমনি জামাতে নামাজ পড়ার জন্যে পবিত্র কোরআনে তাগিদ দেয়া হয়েছে।

মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘হাটু পর্যন্ত পা খোলার দিনের কথা স্মরণ কর, যেদিন তাদের সেজদা করতে আহ্বান করা হবে, তখন তারা সেজদা করতে পারবে না। তাদের দৃষ্টি অবনত থাকবে, তারা অপমান ও লাঞ্ছনাগ্রস্থ হবে। অথচ তারা যখন সুস্থ অবস্থায় ছিল, তখন তাদের সেজদা করার জন্য আহ্বান জানানো হতো।’ (সূরা: আল কলম, আয়াত ৪২-৪৩)।

নিউজওয়ান২৪.কম/আহনাফ